রোহিঙ্গারা ফিরে যাবে কবে?

সুজাউদ্দিন রুবেল :

বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে দেড় বছরের বেশি সময় ধরে নানামুখী চেষ্টা চললেও তা এখন পর্যন্ত সফল হয়নি। ফলে বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর চাপের মুখে নানা সমস্যার মুখোমুখি স্থানীয়রা। নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো নিজেদের স্বার্থে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করছে। প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া কবে নাগাদ শুরু হবে সেটা জানাতে না পারলেও পারলেও বাংলাদেশ এজন্য সব সময় প্রস্তুত বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।

২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয়ভাবে জাতিগত নিষ্ঠুর দমন নিপীড়নের মুখে রোহিঙ্গারা সাগরে ভেসে, নাফ নদী পাড়ি দিয়ে, আবার কখনো মাইলের পর মাইল পায়ে হেঁটে পাহাড় ডিঙ্গিয়ে আশ্রয় নেয় বাংলাদেশে। যার সংখ্যা এখন নতুন-পুরাতন মিলে এগারো লাখে ছাড়িয়েছে। এক মাস দুমাস করে গত ১ বছর ৭ মাসেরও বেশি সময় ধরে এসব রোহিঙ্গার ভার বইছে বাংলাদেশ।
সরকারের নানামুখী উদ্যোগ এবং মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়লেও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া কার্যকর হচ্ছেনা।

আলোচনা, চুক্তি, তালিকা হস্তান্তর, যাচাই-বাছাইসহ রোহিঙ্গাদের প্রতি অনুকম্পা দেখানোর বড় বড় আয়োজনও আছে, কিন্তু মিয়ানমারের নানা অজুহাতে থেমে আছে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া। এতে বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর চাপের মুখে নানা সমস্যার মুখোমুখি স্থানীয়রা।
কক্সবাজারের স্থানীয় বাসিন্দা কলিম উল্লাহ বলেন, রোহিঙ্গারা আসার পর থেকে আমরা কক্সবাজারবাসী খুবই কষ্টে আছি। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি, যাতায়াত সমস্যা, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি এসব কারণে আতংকের মধ্যে রয়েছি।

এএইচএম নজরুল ইসলাম বলেন, বিদেশি এনজিও সংস্থাগুলোর কারণেই মূলত কক্সবাজারবাসী রোহিঙ্গাদের চেয়ে বেশি চাপের মুখে রয়েছে। কারণে একটা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে আমরা চলে যাচ্ছি।  

রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে সরকারের সদিচ্ছা থাকলেও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো নিজেদের স্বার্থে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করছে বলে দাবি নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান লে কর্নেল (অব:) ফোরকান আহমদের। তিনি বলেন, শুধু করবো করছি হবে হচ্ছে এরকম করলে হবে না। নিন্দিষ্ট সময় সীমার মধ্যে তাদের চেষ্টা চালাতে হবে ফেরত পাঠানোর জন্যে।

প্রত্যাবাসন শুরুর কোন তথ্য না জানাতে পারলেও বাংলাদেশ এ জন্য সব সময় প্রস্তুত বলে জানান জেলা প্রশাসক মো কামাল হোসেন। তিনি বলেন, আইন শৃঙ্খলা বিষয়সহ জেলা প্রশাসনের যে এখতিয়ার রয়েছে তা দিতে আমরা প্রস্তুত আছি।

রোহিঙ্গাদের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত উখিয়া ও টেকনাফের প্রায় ৬ লাখ মানুষ। আর ধ্বংস হয়েছে ৬ হাজার ১শ ৬৩ একর বনভূমি।